পূর্বনির্ধারিত লক্ষ্য অর্জনের জন্য সম্পাদিত কার্যাবলিকে ব্যবস্থাপনা বলা হয়। প্রতিষ্ঠানের সকল প্রকার মানবিক ও অন্যান্য উপাদানকে দক্ষতার সাথে পরিচালনার মাধ্যমে লক্ষ্য অর্জনের জন্য ব্যবস্থাপনার আওতায় অনেকগুলো কাজ করতে হয়। নিম্নে ব্যবস্থাপনার কার্যাবলি বিশ্লেষণ করা হলো—
১. পরিকল্পনা প্রণয়ন (Planning) : পরিকল্পনা হলো ভবিষ্যৎ কার্যক্রমের দিক-নির্দেশনা। কোনো ব্যবসায় সংগঠনের পূর্বনির্ধারিত লক্ষ্য অর্জনের জন্য ভবিষ্যতে কী কাজ, কে, কীভাবে, কখন করবে তা নির্ধারণ করাই হলো পরিকল্পনা। ব্যবস্থাপনার প্রথম কাজ হচ্ছে পরিকল্পনা প্রণয়ন ।
২. সংগঠিতকরণ (Organizing) : ব্যবসায়ের প্রয়োজনীয় সকল মানবিক ও বস্তুগত উপকরণ এবং সম্পদকে যথাযথভাবে ব্যবহার করার জন্য কর্মীদের মধ্যে দায়িত্ব ও ক্ষমতা বণ্টন এবং আন্তঃসম্পর্ক তৈরির কার্যাবলিকে সংগঠিতকরণ বলা হয় ।
৩. কর্মীসংস্থান (Staffing) : প্রতিষ্ঠানের অন্যতম উপাদান হচ্ছে তার কর্মী বাহিনী। কর্মী বাহিনীকে ব্যবসায়ের অন্যতম মানবিক সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কার্য সম্পাদনের জন্য উপযুক্ত কর্মী সংগ্রহ, নির্বাচন, নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ প্রদান, পদোন্নতি, বদলি, ছাঁটাই প্রভৃতি কাজ কর্মীসংস্থানের অন্তর্ভুক্ত।
৪. নির্দেশনাদান (Directing) : পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য কর্মীদের আদেশ-নির্দেশ প্রদান করাকে নির্দেশনা বলে। ব্যবস্থাপক কর্মীদের কোন কাজ কখন, কীভাবে সম্পন্ন করতে হবে তার নির্দেশনা প্রদান করে থাকেন। যথার্থ নির্দেশনা দিতে পারলে কর্মীরা সর্বাধিক দক্ষতা প্রদর্শন করতে পারে। অনেকে নির্দেশনাদানকে নেতৃত্বদানের সাথে তুলনা করেছেন।
৫. প্রেষণাদান (Motivating) : প্রতিষ্ঠানের কর্মীদেরকে কাজের প্রতি আগ্রহী ও উৎসাহী করার প্রক্রিয়াকে প্রেষণা বলা হয়। প্রেষণার ফলে কর্মীরা আগ্রহ নিয়ে দায়িত্ব পালনে উদ্বুদ্ধ হয় এবং মানসম্মত কাজ সম্পাদনে সক্ষম হয়।
৬. সমন্বয়সাধন (Co-ordinating) : সমন্বয় সাধন প্রক্রিয়ায় ব্যবসায় সংগঠনের কর্মী, বিভিন্ন বিভাগ ও উপবিভাগের মধ্যে কার্যকর যোগাযোগ স্থাপন করা হয়। সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের সকলে মিলে একটি দলে পরিণত হয় যা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ সম্পাদনে সহায়তা করে ।
৭. নিয়ন্ত্রণ (Controlling) : পরিকল্পনা অনুযায়ী কার্য সম্পাদিত হচ্ছে কিনা তা তদারক করা, ত্রুটি-বিচ্যুতি নির্ণয় করা এবং প্রয়োজনে সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার সার্বিক প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ বলা হয়। নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সহজতর হয়। নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার সঠিক ও সুদৃঢ় ভূমিকার কারনে ব্যবসায় সংগঠন তার আভ্যন্তরীন ও বাহ্যিক সকল অচলাবস্থা ও বাধা মোকাবেলা করে উন্নতির দিকে ধাবিত হয় । মূলত নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে সঠিক কাজ সঠিক পদ্ধতিতে সঠিক সময়ে সংঘটিত হচ্ছে কি না তা নিশ্চিত করা হয় ।
আরও দেখুন...